Header Ads

Header ADS

বর্তমান সময়ে বিবাহ এবং নিজের পায়ে দাড়ানো

বর্তমান সময়ে বিবাহ এবং নিজের পায়ে দাড়ানো

উঠতি বয়সে প্রায় সব ছেলেমেয়েদেরই প্রচন্ড বিয়ের মোহ থাকে। সারাক্ষন দু’চোখ দিয়ে চারপাশে শুধু সুন্দর ছেলেমেয়ে খুঁজে বেড়ায়। এ বয়সে মেয়েরা প্রেমে পড়লেই বিয়ের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠে। এমন কি পালিয়ে বিয়ে করতেও এক পায়ে প্রস্তুত থাকে তারা।
কিন্তু যদি না কারো সাথে দীর্ঘ ও গভীর কোন এফেয়ার থাকে, বয়স বাড়লে, শিক্ষিত হলে, বিয়ের প্রতি তাদের অধিকাংশেরই একটা অনীহা জন্ম নেয়। বাবা মা তাদের জন্য বিয়ের সম্বন্ধ আনলে তারা প্রতিবাদে নাকের জল চোখের জল এক করে ছাড়ে। জগতটাকে দেখবার, বয়সটাকে উপভোগ করবার, অভিজ্ঞতাটাকে সমৃদ্ধ করবার, পড়ালেখা করে ক্যারিয়ার গড়বার এক দুরন্ত জেদ চেপে বসে তাদের মনে। সে সময়ে অনেক ছেলেকে ভালো লাগলেও পছন্দ করবার মতো যোগ্য ছেলেটিকে তারা তখন আর খুঁজে পায় না কিংবা খোঁজার গরজও বোধ করে না।
ইউনিভার্সিটি পাশ করতে করতে বয়স ২৪/২৫ পার হয়। বিসিএস কিংবা অন্য কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পুরুষদের পাশাপাশি যোগ্যতার প্রমান দেয়ার প্রচন্ড নেশা চাপে তাদের। সে পরীক্ষায় অনেকে সাফল্যও পায়। তারপর চলে নিজের পায়ে দাঁড়াবার, স্বাবলম্বী হবার সংগ্রাম, নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার সংগ্রাম।
কিন্তু ততদিনে পদ্মা মেঘনা যমুনার জল গড়িয়ে যায় অনেক। মেঘে মেঘে হয়ে যায় অনেক বেলা। খরচ হয়ে যায় আয়ুর সোনালী অধ্যায়।
বিয়ের বাজারে নিজের চাইতে যোগ্য ছেলে খুঁজে পাওয়া তখন দুস্কর হয়ে দাঁড়ায় তাদের জন্য। প্রচন্ড মেধাবী যে মেয়েটি অনার্স মাস্টার্স পাশ করে এমফিলও শেষ করে ফেলে, কিংবা হয়ে যায় বিসিএস ক্যাডার, বিয়ের বাজারে তারচেয়ে অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন পাত্রের খোঁজ করতে গিয়ে এক বিশাল ধাক্কা খায় সে—তিরিশ প্লাস যোগ্য পাত্রগুলি তার তিরিশ প্লাস বয়সটার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। পাত্রের স্বজনরা তাকে আধুনিক হৈমন্তী’র মর্যাদা দিয়ে বসে।
একুশ বাইশ বয়সের মেয়ের বর্ণিল স্বপ্নগুলি তিরিশ পেরিয়ে বিবর্ণ হয়ে পড়ে। তার একদা উপচে পড়া চকচকে যৌবনের কোথাও কোথাও গোপন মরচে পড়ে। তার বিশাল আর আলো ঝলমলে পৃথিবীতে রাত নামতে থাকে। পুরুষতান্ত্রিক এই পৃথিবীতে একটা নিরাপদ আশ্রয় আর অবলম্বন ছাড়া যে সে ভীষন অসহায় এতদিন পর এই নির্মম সত্য অনুধাবন করে সে কাঁপতে থাকে ভয়ে আর অনিশ্চয়তায়। স্বামী সন্তান নিয়ে একটা ছোট্ট সংসারের জন্য সে সারা জীবনের কষ্টার্জিত সকল ডিগ্রী ও যোগ্যতা বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত হয়ে পড়ে।
আমাদের সমাজে পাত্রী খোঁজার সময় এ ধরনের দুর্ভাগা কিছু মেয়ের দেখা মেলে। এমন কিছু দুঃখ জনক ঘটনা নিচে দিলাম।
ফ্রেন্ড লিস্টের একজন নারী বিসিএস কর্মকর্তা আছেন যিনি ৩৪ বছর বয়সে এসে 'যোগ্য' পাত্র খোজা বন্ধ করে এখন 'মোটামুটি' মার্কা পাত্র খুঁজছেন।
ফ্রেন্ড লিস্টের একজনের বড় বোন ডাক্তার। ৬ বছর ধরে 'যোগ্য' পাত্র খুজতে খুজতে তিনি নিজেই অযোগ্য হবার যোগাড় হয়েছেন।
বয়স ৩৫ চলছে। ওনার পরিবারের প্রথম টার্গেট ছিল ডাক্তার পাত্র ছাড়া বিয়ে দিবে না। ২৯ বছর বয়সে যখন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিল তখন কিছু সিনিয়ার অবিবাহিত ডাক্তার পাত্র পাওয়া যাচ্ছিল কিন্তু সেগুলো তাদের পছন্দ হচ্ছিল না। পাত্র খুজতে খুজতে বয়স এখন ৩৫ এ এসে দাঁড়িয়েছে।
এখন আর ডাক্তার পাত্র পাচ্ছে না। মনে হয় আর পাবেনও না। এখন 'অডাক্তার' ছেলে পেলেও চলবে। ইভেন জুনিয়ার কোন ব্যাপার না।
এই আপু একজন উচ্চ শিক্ষিতা, উচ্চতর ডিগ্রী নিতে গিয়ে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। ওনার জীবনের লক্ষ্যই ছিল উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে কিন্তু ততক্ষনে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। এখন এত এত ডিগ্রী সত্বেও পাত্র পাচ্ছেন না। ওনার বয়স এখন ৩৫/৩৬।
ফ্রেন্ড লিস্টের এই আপু আমাকে ধরেছেন ওনার ঘটকালী করার জন্য। আমার সাথে মাঝে মাঝেই কথা হয়। বয়স ৩৬ চলছে। পারিবারিক কী এক ঝামেলার কারনে এখনো বিয়ে করতে পারেন নি।
আসলে সময়ের কাজ সময় থাকতেই করতে হয়। লেখাপড়া, ক্যারিয়ার ইত্যাদির জন্য অনেক মেয়ে বিয়ের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিন্তু যত বড় ক্যারিয়ার থাকুক না কেন ছেলেরা চাইবে তার চাইতে মিনিমাম ৩/৪/৫/৬ বছর জুনিয়র মেয়েকে বিয়ে করতে। সেই হিসেবে শিক্ষিত সমাজে সবচেয়ে বেশি ডিমান্ডের মেয়েরা হয় ১৬ থেকে ২২ বছর বয়সী।
"একটা সময় টাকার অভাবে চুলে শ্যাম্পু দিতে পারতাম না, আর এখন চুলের অভাবে শ্যাম্পু দিতে পারি না।"
সুতরাং বিয়ের ব্যাপারে দেরি করতে নেই। অভিভাবকদের উচিত বিষয় টা চিন্তা করা।

ফেসবুক ফ্রেন্ড Riyad Gazi

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.