Header Ads

Header ADS

الرسالة القشیریة সুফিবাদ সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক গ্রন্থ।এর লেখক ও গ্রন্থ পরিচিতি

الرسالة القشیریة সুফিবাদ সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক গ্রন্থ।এর লেখক ও গ্রন্থ পরিচিতি


ইমাম কুশাইরি রহমতুল্লাহি আলাইহি এর পুরো নাম শায়খ আবুল কাশেম আব্দুল করিম ইবনে হাওয়াজেন ইবনে আব্দুল মালিক ইবনে তালহা ইবনে মোহাম্মদ আল ইসতিওয়াঈ আর কুশাইরী আননিশাপুরী আশ শাফেয়ী। 
জন্ম ঃ গজনীর খোরাসান জয়ের দশ বছর পর রবিউল আউয়াল এর ৩৭৬ হিজরীতে উত্তর খোরাসানের অন্তর্গত উস্তয়া অঞ্চলে। আরবের বিখ্যাত গোত্র বনু কুরাইর ইবনে রবীয়ার অন্তরর্গত হওয়ায় তাকে কুশাইরি বলা হয়। উমাইয়া শাসনামলে বনু কুশাইর গোত্রের অনেক লোক খোরাসান নিশাপুর এমন কি স্পেনে চলে যান। সেখানে বসতি স্থাপন করেন। বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ’ মুসলিম শরীফ এর লেখক ইমাম মুসলিম ইবনে হাজ্জাজও কুশাইর গোত্রের এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
ইমাম কুশাইরী রহমতুল্লাহি আলাইহি শৈশবেই তার পিতাকে হারান। তখন তার পারিবারিক ভাষা ছিল ফার্সি। আবুল কাসেম আল ইয়ামানীর কাছে তিনি শৈশবেই আরবি ভাষা ও সাহিত্যে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। এ সময় তিনি ধনু বিদ্যা, ঘোড়ায় চড়া, শারীরিক ব্যায়াম ইত্যাদি শিখে ফেলেন। এরপর তিনি মুসলিম জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্রবিন্দু নিশাপুর চলে যান। সেখানে সম্ভবত সুলতান মাহমুদের প্রশাসনের অর্থ বিভাগ কোন চাকরির জন্য গণিত শিখেন। বিখ্যাত সুফি আবু আলী আল হাসান আদ দাক্কাক তখন নিশাপুরে তাসাউফ শিক্ষা দিতেন। তিনি ইমাম কুশাইরিকে স্বীয় তরিকার অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি তার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেন। এবং তাকে একজন বিজ্ঞ পন্ডিত হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন। তার নির্দেশে তিনি আবু বকর এর কাছে ৪২০ হিজরীতে উসূলে ফিকহ অর্জন করেন। সবশেষে কুশাইরি রহমতুল্লাহি আলাইহি এর কাছে শায়েখ দাক্কাক রহঃ তার কন্যা ফাতেমাকে বিয়ে দেন ফাতিমা নিজে একজন বিখ্যাত সুফি, আলিম, হাদিসবেত্তা ছিলেন। ইমাম কুশাইরি রহমতুল্লাহি কমপক্ষে ১৭ জন মুহাদ্দিস থেকে হাদিস শুনেছেন এবং ৬৬ জন তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন ইমাম আব্দুল গাফের আন নিশাপুরী রহমাতুল্লাহ আলাইহি এর মতে তিনি ছিলেন স্বীয় যুগের ইমাম, সুফি, দার্শনিক, ধর্মতত্ত¡বিদ, মুফাসসির, সাহিত্যিক, ব্যাকরণবিদ, কবি ও অসাধারণ ভাগ্নি। ইমাম কুশাইরি রহঃ মাসআলার ক্ষেত্রে শাফি রহমাতুল্লাহ আলাইহি এর আনসারী এবং মূল আকিদার ক্ষেত্রে ইমাম আবুল হাসান আশআরী রহ. এর অনুসারী।
ইমাম কুশাইরি রহ. ১৭ ই রবিউস সানি ৪৬৫ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। শায়েখ আদ দাক্কাক এর পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়। (সংক্ষেপে তার পরিচিতি)

গ্রন্থের পরিচিতি ঃ এর পূর্ণ নাম হল الرسالة الی جماعة الصوفیة ببلدان الاسلام

এই গ্রন্থে’ সুফিবাদ সম্পর্কে আদ্যোপান্ত আলোচনা করা হয়েছে। রিসালাহ লেখার সময়কাল হলো ৪৩৮ হিজরীত। হিজরী প্রথম শতক থেকে পঞ্চম শতকের শেষ পর্যন্ত তাসাউফ বিষয়ক যে সকল আলোচনা ও মতবাদ প্রচলিত হয়েছিল তার সারনির্যাস হলো এই রিসালা। জন্মলগ্ন থেকে সুফিদের নিকট এটি অতীব মুল্যবান ও দিক নির্দেশনা মূলক বই। কেবল সুফিবাদের ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য তিনি এই রেসালা প্রনয়ন করেননি। (রেসালা লেখার কারনেঃ এই শিরোনামে একটি লেখা দেয়ার ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ।) তৎকালীন সময়ে সুফীদের কঠিন সমালোচনা শুরু হয়েছিল। শুধু তাই নয় বরং প্রতিতজশা সুফি হযরত জুনায়েদ বাগদাদী ও যুন-নুন মিসরী প্রমুখ কে ভন্ড ও ধর্মদ্রোহী আখ্যা দেয়া হচ্ছিল। এমনকি তাদের কে কাফের পর্যন্ত বলা হচ্ছিল। এর মনসুল হাল্লাজের “আনাল হক্ক” সমালোচনার ঝড় তুলেছিল। অন্যদিকে কিছু লোক সুফিদের পরিভাষা “হুররিয়্যাহ” এর ভুল ব্যাখ্যা দিতে শুরু করলো। এ জন্য কুশাইরী রহ. উভয় প্রকার বিষয়কে সামনে রেখে রিসালা গ্রন্থ’ টি মুতালাআ দেখা ও একজন হক্কানী দীক্ষাপ্রাপ্ত মুরুব্বীদের অধীনে থেকে নিজেকে সংশোধনের এখনি সময়।
এই গ্রন্থে’ পাঁচটি শিরোনাম রয়েছে।
যথাঃ
১ সুফিদের আকিদা।
২ তরিকতের মাশায়েখগন ৮৩ জন শায়েখের আলোচনা করেছেন। 
৩ সুফিদের পরিভাষা ও ব্যাখ্যা। 
৪ সুফিদের মাকামাত ও হালাত।
এগুলো সকল মাদ্রাসায় তালীম করা যেতে পারে। কমপক্ষে বড় জামাতে অবশ্যই তালীম যোগ্য। আমাদের ইফতার বছর মাওলানা মুফতি হারুন সাহেব দা.বা. তালীম করতেন। আল্লাহ তাকে জাযায়ে খায়ের দান করুন। 
৫ জরুরী কিছু উপদেশ।

          লেখক 
হযরত মাওলানা মুফতি সাইফুল ইসলাম
মুহাদ্দিস ও সহকারী মুফতী- আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ইদারাতুল উলূম আফতাবনগর ঢাকা। 
মাষ্টার্স- আল হাদিস এন্ড ইসলামিক ষ্টাডিজ ইলসামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.